ইলিশ ধরতে জীবনের ঝুঁকি ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সাগরে ছুটছেন গলাচিপা উপজেলার জেলেরা। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার (২৩ জুলাই) ভোর থেকে সাগরে রওনা শুরু করেছেন জেলেরা।
উপজেলার গোলখালী,উলানিয়া, পানপট্টি,পকিয়া,বোয়ালিয়া, চরখালী,চর কাজল,চর বিশ্বাস,বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রলারযোগে জেলেরা রওনা দিয়েছেন। সরকারি হিসাবে অন্তত ১২ হাজার জেলে গলাচিপা উপজেলা থেকে মৎস্য আহরণে সাগরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সাগরে যাওয়া জেলেদের জীবনের ঝুঁকিসহ রয়েছে নানা শঙ্কা।
উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন এলাকার জেলে জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, বাপ-দাদার পেশা হিসেবে সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। এবছরও যাচ্ছি। এভাবেই জীবন কেটে যায় আমাদের। একই এলাকার জেলে নাসির উদ্দীন হাওলাদার বলেন, অবরোধের কারণে ৬৫ দিন সাগরে যেতে পারিনি। অবরোধ শেষ হয়েছে, এখন যাচ্ছি।
আশা করি এবার মাছ ভাল পাব। গলাচিপা সদর ইউনিয়ন এলাকার মোসলেম গাজী বলেন, অবরোধের সময় খুব কষ্টে দিন কাটে আমাদের। ধারদেনা করে পেট চালাতে হয়। এর পাশাপাশি অবরোধের সময় জালসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রস্তুতের জন্যও টাকা ধার করতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরে লোকালয়ে এনে বিক্রি করতে হয় কম দামে।
পানপট্টি ইউনিয়ন এলাকার ছোবাহান মিয়া বলেন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ নানা দুর্যোগের সাথে ভয়ঙ্কর সব প্রাণির ভয় মাথায় নিয়ে সাগরে মাছ ধরি আমরা। কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কখনও পরিবর্তন হয় না। আর সরকারি সহযোগিতাও সব জেলেরা পায় না। অবরোধের সময়, সরকারি সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি। শুধু পলাশ সাহা নয়, উপজেলার বেশির ভাগ জেলেদেরই দাবি সরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। প্রকৃত জেলেদের জাল ও নৌকা তৈরির জন্য সরকারিভাবে বিনা সুদে ঋণ প্রদানেরও দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জহিরুন্নবী বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার ভোর থেকে জেলেরা সাগরে রওনা হয়েছেন। অবরোধ শেষে জেলেরা ভাল মাছ পাবেন বলে আশা করেন তিনি। মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছ ধরার ওপর গত ১৯ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।